যশোরের ঝিকরগাছায় এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে জড়িতদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। আজ (সোমবার) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে তারা বিক্ষোভ করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই, খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন/রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের/বিচার করো করতে হবে’, ‘ধর্ষকরা ধর্ষণ করে/প্রশাসন কী করে?’ শ্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর বাংলাদেশের আশায় এদেশের ছাত্রসমাজ ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিল। আন্দোলনে বিজয় অর্জন করলেও আমরা দেখলাম সারা দেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমাদের মা-বোনেরা রাস্তাঘাটে নিরাপত্তার সাথে চলাফেরা করতে পারছে না। প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। শিশু, গৃহবধূসহ কোনো নারীই রেহাই পাচ্ছে না ধর্ষকদের ভয়াল থাবা থেকে। এমন বাংলাদেশ দেখার জন্য তো আমরা আন্দোলন করিনি, রাজপথে রক্ত দিইনি, বলেন বক্তারা। বক্তারা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রদান এবং নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খান, মুখ্য সংগঠক আব্দুল্লাহ আল-মামুন লিখন, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব জান্নাতুল ফুয়ারা অন্তরা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবার বিকেলে ঝিকরগাছার গদখালি ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া গ্রামের একটি লিচু বাগানে ভুক্তভোগী ঐ তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঝিকরগাছা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে উদ্ধার করেছে। মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে সন্ধ্যায় অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তরা হলেন : ঝিকরগাছার গদখালি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন বাপ্পী, দপ্তর সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত, জাবেদ হোসেন ও আমিনুর রহমন। রাতে ভুক্তভোগী ঔ তরুণী চারজনকে আসামী করে মামলা করে। সোমবার অভিযুক্ত চার আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয় বলে জানান ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবলুর রহমান খান।

পুলিশ জানিয়েছে, মণিরামপুর উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের রাজগঞ্জ গ্রামের তরুণী (১৯) বেনাপোলে খালাবাড়ি থেকে ফেরার পথে গদখালী বাজারে নামেন। এরপর গদখালী বাজারের ফুলের দোকানদার আমিনুর রহমানের দোকানে গেলে ৪ বন্ধুর সাথে পরিচয় হয়। সেই সূত্রে ঐ তরুণীকে গদখালী এলাকায় ফুলবাগান দেখাতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পটুয়াপাড়া গ্রামের জাবেদ হোসেনদের লিচুবাগনে নিয়ে গণধর্ষণ করে। এরপর ঐ চার যুবক ঐ তরুণীকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।