ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তবে জীবিত নয় মৃত

যশোরে নিখোঁজের ২২ দিন পর পুলিশ কনস্টেবলের খোঁজ মিলেছে পঞ্চগড়ে

প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৫:০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে

কনস্টেবল আক্তারুজ্জামান -কপোতাক্ষ ফাইল ছবি

কর্মস্থল থেকে নিজ বাড়ি যশোরের চৌগাছায় ছুটিতে এসে নিখোঁজ ছিলেন আক্তারুজ্জামান (৪৬) নামে এক পুলিশ সদস্য। তার খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে তিনি আর বেঁচে নেই। নিখোঁজের ২২ দিন পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের নয়মাইল গ্রামের একটি আখক্ষেত থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত হিসাবে তার মরদেহ উদ্ধার হলেও আজ (শুক্রবার) তার পরিচয় জানা যায়। এদিন বিকালে আক্তারুজ্জামানের নিহত হওয়ার খবর স্বজনেরা জানতে পেরে সন্ধ্যায় মরদেহ আনার জন্য পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।

আক্তারুজ্জামান খুলনা রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জামলতা গ্রামে। গত ২৮ নভেম্বর আক্তারুজ্জামান নিখোঁজের জিডি করেন তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার।

নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশের পাঠানো পরনের প্যান্ট, শার্ট, জুতার ছবি দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি মরদেহটি তার বোনের স্বামীর। আমরা ইতোমধ্যে কয়েকজন পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছি। মরদেহ স্থানীয় মর্গে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।’

পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাড়ে নয়মাইল এলাকায় সুমেত আলীর আখখেত থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। স্থানীয়রা আখখেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

প্রথমে মরদেহটি অজ্ঞাত হলেও পরবর্তীতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পরিচয় শনাক্ত করেন।

পঞ্চগড় থানার তদন্ত কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক বেলাল হোসেন জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। তারা থানায় পৌঁছালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।

তিনি বলেন, ক্লু-লেস মরদেহটি পরিচয় শনাক্তে একমাত্র সূত্র হয় উদ্ধারকৃত মরদেহের আন্ডারওয়ার, যা ছিল পুলিশের লোগো সম্বলিত। সেটি একজন পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তার পরনের প্যান্ট, শার্ট, জুতার ছবি নিহতের স্ত্রীকে নিয়ে দেখালে তিনি তার স্বামীর পোশাক বলে শনাক্ত করেন।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু মরদেহটি প্রায় অর্ধগলিত, তাই এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু, তা বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

যশোরের চৌগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শাহিনা আক্তার ২৮ নভেম্বর জিডিতে উল্লেখ করেন, তার স্বামী ২৬ নভেম্বর পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে চৌগাছায় আসেন। ২৭ নভেম্বর সকালে মহেশপুর যাওয়ার কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বাসায় রেখে যান। এরপর আমরা জানতে পারি পুলিশ সদস্যের মরদেহ পঞ্চগড়ে পাওয়া গেছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তবে জীবিত নয় মৃত

যশোরে নিখোঁজের ২২ দিন পর পুলিশ কনস্টেবলের খোঁজ মিলেছে পঞ্চগড়ে

আপডেট সময় : ০৫:০৭:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

কর্মস্থল থেকে নিজ বাড়ি যশোরের চৌগাছায় ছুটিতে এসে নিখোঁজ ছিলেন আক্তারুজ্জামান (৪৬) নামে এক পুলিশ সদস্য। তার খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে তিনি আর বেঁচে নেই। নিখোঁজের ২২ দিন পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের নয়মাইল গ্রামের একটি আখক্ষেত থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত হিসাবে তার মরদেহ উদ্ধার হলেও আজ (শুক্রবার) তার পরিচয় জানা যায়। এদিন বিকালে আক্তারুজ্জামানের নিহত হওয়ার খবর স্বজনেরা জানতে পেরে সন্ধ্যায় মরদেহ আনার জন্য পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।

আক্তারুজ্জামান খুলনা রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার রামপাল থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জামলতা গ্রামে। গত ২৮ নভেম্বর আক্তারুজ্জামান নিখোঁজের জিডি করেন তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার।

নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামুন বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশের পাঠানো পরনের প্যান্ট, শার্ট, জুতার ছবি দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি মরদেহটি তার বোনের স্বামীর। আমরা ইতোমধ্যে কয়েকজন পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছি। মরদেহ স্থানীয় মর্গে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।’

পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাড়ে নয়মাইল এলাকায় সুমেত আলীর আখখেত থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। স্থানীয়রা আখখেতে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

প্রথমে মরদেহটি অজ্ঞাত হলেও পরবর্তীতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পরিচয় শনাক্ত করেন।

পঞ্চগড় থানার তদন্ত কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক বেলাল হোসেন জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে। তারা থানায় পৌঁছালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।

তিনি বলেন, ক্লু-লেস মরদেহটি পরিচয় শনাক্তে একমাত্র সূত্র হয় উদ্ধারকৃত মরদেহের আন্ডারওয়ার, যা ছিল পুলিশের লোগো সম্বলিত। সেটি একজন পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তার পরনের প্যান্ট, শার্ট, জুতার ছবি নিহতের স্ত্রীকে নিয়ে দেখালে তিনি তার স্বামীর পোশাক বলে শনাক্ত করেন।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। যেহেতু মরদেহটি প্রায় অর্ধগলিত, তাই এটি হত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে মৃত্যু, তা বোঝা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

যশোরের চৌগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের স্ত্রী শাহিনা আক্তার ২৮ নভেম্বর জিডিতে উল্লেখ করেন, তার স্বামী ২৬ নভেম্বর পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে চৌগাছায় আসেন। ২৭ নভেম্বর সকালে মহেশপুর যাওয়ার কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বাসায় রেখে যান। এরপর আমরা জানতে পারি পুলিশ সদস্যের মরদেহ পঞ্চগড়ে পাওয়া গেছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।