ঢাকা ০৮:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতি

সার সংকট, দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিবাদে ৫ দফা

প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:৪৯:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

জিল্লুর রহমান ভিটু সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন -কপোতাক্ষ

সার সংকট, দুর্নীতি-অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ৫ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতি।

আজ (সোমবার) দুপুরে যশোর শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান। দাবি মানা না হলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্য়ালয়ের সামনে ‘ঘেরাও’ কর্মসূচি করা হবে বলে হুশিয়ারি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগের সরকারদের মতোই কৃষকবিরোধী নীতি অনুসরণ করে চলেছে। ছাত্র-শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানে গঠিত এই সরকার আগের মতোই কৃষিব্যবস্থা, উৎপাদন ও কৃষিপণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রে কৃষকবিরোধী নীতি অনুসরণ করে চলেছে। সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের ফলে কৃষক দিশেহারা। সারের মূল্যবৃদ্ধির অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষি উৎপাদন বিপন্ন হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতে সার বন্টন ডিলার নিয়োগ কৃষকদের অন্ধকারে রেখেই করা হয়। কারা ডিলার এবং তাদের বরাদ্দ কত, সেটাও কৃষকদের কাছে অজ্ঞাত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভেজাল সার ও কীটনাশক দৌরাত্ম্যে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত এবং কৃষক প্রতারিত হচ্ছে। সংবাদপত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যেমন মণিরামপুরের চালকিডাঙ্গার কুণ্ডু ট্রেডার্সের চঞ্চল, রাজগঞ্জের রবিউল, চৌগাছার রিপন, নাভারণের রাসেল ট্রেডার্স প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার এবার ধানের ক্রয় মূল্য কমিয়েছে এবং চাল ক্রয়মূল্য বাড়িয়ে মিলারদের স্বার্থ সংরক্ষণ করছে। ইউনিয়নে ধান ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় প্রকৃত কৃষকরা সরকারি গোডাউনে ধান বিক্রি করতে পারবে না। বিএডিসিতে বীজ আসার সাথে সাথে তাদের পছন্দমত নির্দিষ্ট লোকের হাতে চলে যায়। যত্রতত্র ঘের করায় জলাবদ্ধতা ও ফসলি জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আবাসনের নামে কৃষিজমি হ্রাস করা হচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে কৃষিজমি রক্ষা দরকার।

নেতৃবৃন্দ কৃষি অফিসের মাধ্যমে বোরোমৌসুমে সরাসরি কৃষকের হাতে প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ, সারের বরাদ্দ ও ডিলারদের নাম, বরাদ্দের পরিমাণ জনসম্মুখে প্রকাশ, বহিরাগত ও ভুয়া ডিলারশিপ বাতিল, ভেজাল সার, বীজ, কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, অবৈধ ঘের অপসারণ ও ঘের নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং কৃষিজমি আবাসন খাতে না দেওয়ার পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিম-উর-রহমান, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতি

সার সংকট, দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিবাদে ৫ দফা

আপডেট সময় : ১২:৪৯:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সার সংকট, দুর্নীতি-অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ৫ দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতি।

আজ (সোমবার) দুপুরে যশোর শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান। দাবি মানা না হলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্য়ালয়ের সামনে ‘ঘেরাও’ কর্মসূচি করা হবে বলে হুশিয়ারি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগের সরকারদের মতোই কৃষকবিরোধী নীতি অনুসরণ করে চলেছে। ছাত্র-শ্রমিক জনতার অভ্যুত্থানে গঠিত এই সরকার আগের মতোই কৃষিব্যবস্থা, উৎপাদন ও কৃষিপণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রে কৃষকবিরোধী নীতি অনুসরণ করে চলেছে। সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকটের ফলে কৃষক দিশেহারা। সারের মূল্যবৃদ্ধির অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষি উৎপাদন বিপন্ন হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতে সার বন্টন ডিলার নিয়োগ কৃষকদের অন্ধকারে রেখেই করা হয়। কারা ডিলার এবং তাদের বরাদ্দ কত, সেটাও কৃষকদের কাছে অজ্ঞাত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভেজাল সার ও কীটনাশক দৌরাত্ম্যে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত এবং কৃষক প্রতারিত হচ্ছে। সংবাদপত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যেমন মণিরামপুরের চালকিডাঙ্গার কুণ্ডু ট্রেডার্সের চঞ্চল, রাজগঞ্জের রবিউল, চৌগাছার রিপন, নাভারণের রাসেল ট্রেডার্স প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার এবার ধানের ক্রয় মূল্য কমিয়েছে এবং চাল ক্রয়মূল্য বাড়িয়ে মিলারদের স্বার্থ সংরক্ষণ করছে। ইউনিয়নে ধান ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় প্রকৃত কৃষকরা সরকারি গোডাউনে ধান বিক্রি করতে পারবে না। বিএডিসিতে বীজ আসার সাথে সাথে তাদের পছন্দমত নির্দিষ্ট লোকের হাতে চলে যায়। যত্রতত্র ঘের করায় জলাবদ্ধতা ও ফসলি জমি চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আবাসনের নামে কৃষিজমি হ্রাস করা হচ্ছে। জরুরিভিত্তিতে কৃষিজমি রক্ষা দরকার।

নেতৃবৃন্দ কৃষি অফিসের মাধ্যমে বোরোমৌসুমে সরাসরি কৃষকের হাতে প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ, সারের বরাদ্দ ও ডিলারদের নাম, বরাদ্দের পরিমাণ জনসম্মুখে প্রকাশ, বহিরাগত ও ভুয়া ডিলারশিপ বাতিল, ভেজাল সার, বীজ, কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, অবৈধ ঘের অপসারণ ও ঘের নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং কৃষিজমি আবাসন খাতে না দেওয়ার পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কৃষক খেতমজুর সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তসলিম-উর-রহমান, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস প্রমুখ।