যশোরে জাতীয় পার্টির কার্যালয় অপসারণে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম
- আপডেট সময় : ০৪:১৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫ ২৬৭ বার পড়া হয়েছে
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি -কপোতাক্ষ
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর হামলার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।
আজ (শনিবার) বিকেলে শহরের চৌরাস্তা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে গাড়িখানা রোড়, দড়াটানা ঘুরে গোহাটা রোডস্থ জাতীয় পার্টির কার্যালয় এলাকায় শেষ হয়।
সেখান থেকে নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশি বাঁধায় নেতাকর্মীরা গোহাটা রোডের গলির মুখে সড়কের উপরে অবস্থান নেয়।
সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতাকর্মীরা আগামি ৭২ ঘন্টার মধ্যে যশোর থেকে জাতীয় পার্টির কার্যালয় অপসারণের আল্টিমেটাম দেন।
কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদ যশোরের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
সমাবেশে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা খুন গুম, লুটপাট করেছে। তার সহযোগী ছিল জাতীয় পার্টি। সেই জাতীয় পার্টিকে রক্ষা করতে সরকারের প্রশাসনের একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। খুন গুম নিরহ ছাত্র-জনতার উপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্য আওয়ামী লীগ যেমন নিষিদ্ধ হয়েছে, তেমনি আইনি প্রক্রিয়ায় জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। দলটির শীর্ষ নেতাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আগামি ৭২ ঘন্টার মধ্যে জাতীয় পার্টির জেলা কার্যালয় ছেড়ে দিতে হবে। কার্যালয়ের সামনে থাকা দলীয় সব ব্যানার ফেস্টুন খুলে নিতে হবে। আগামি ৭২ ঘন্টার মধ্যে কার্যালয় অপসারণ না করলে কার্যালয় ভাংচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা যদি ঘটে, তার দায় কিন্তু গণঅধিকার পরিষদ কিংবা ছাত্র-জনতা নেবে না।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির যশোরের প্রধান সংগঠক নুরুজ্জামান বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর প্রতিবিপ্লব হয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জে সেটা ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। প্রশাসন যদি এটা মাথায় রেখে ফ্যাসিবাদি শক্তিকে গ্রেফতার করতো, তাহলে ভিপি নূরের উপর হামলা হতো না। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানও ফ্যাসিস্টদের সুযোগ দিয়েছিল, তার পরিণামে জিয়াকে জীবন দিতে হয়েছে। জামায়াতকেও ফ্যাসিস্টদের সুযোগের বিনিময়ে তাদের ডজন ডজন নেতাকর্মী হারাতে হয়েছে। ফলে যারা ফ্যাসিস্টদের পুর্নবাসনে চেষ্টা করবে তাদেরকে এই ছাত্র-জনতা রুখে দেবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা শোয়াইব হোসেন বলেন, ‘নূরু একদিনে জন্ম হয়নি। যখন ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতো না, তখন এই নূরু তাদের চোখ চোখ রেখে কথা বলেছে। গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক এই নূর। তার উপর হামলা জনগণ মেনে নেবে না। যে জলপাই কালারের বাহিনীরা তার উপর হামলা করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। আপনারা যদি ছাত্র-জনতার শক্তি ভুলে যান, তাহলে কিন্তু আপনাদের সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দেব। ভিপি নূরের উপর যে হামলা হয়েছে, সেই রক্তের বদলা আমরা নেবই।’
সমাবেশে ও বিক্ষোভ মিছিলে ‘আপা গেছে যে পথে, জাপা যাবে সেই পথে, জাতীয় পার্টির ঠিকানা এই বাংলায় হবে না সহ নানা শ্লোগান দিতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের।
জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে প্রবেশের গলির মুখে বিপুল সংখ্যাক পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাতকে। পুলিশের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো গলির মুখে অবস্থান নিইনি। কার্যালয়ের সামনে পুলিশও অবস্থান নেয়নি। নেতাকর্মীরা সড়কের উপরে বসে পড়ে। তাদের সামনেই আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম। কোনোপ্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি।’
আল্টিমেটামের বিষয়ে জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মুফতি ফিরোজ শাহ বলেন, ‘কার্যালয় অপসারণের আল্টিমেটাম কোনো সুষ্ঠু রাজনৈতিক দলের ঘোষণা হতে পারে না। এমনকি রাজনৈতিক দলের বক্তব্যও হতে পারে না। জাতীয় পার্টি শান্তিপ্রিয় দল। তারা কাউকে আক্রমণ করে না। নেতাদের বিরুদ্ধে দখল, সন্ত্রাস চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগও উঠেনি। এই দলটি একটি নিরহদল। এ ধরনের আল্টিমেটাম নিন্দনীয়।’









