ঢাকা ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক খোকন

নার্গিস বেগম সরে দাঁড়ানোয় বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি পদে নতুন সমীকরণ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। প্রতিদিনই হচ্ছে প্রচার মিছিল। মঞ্চ নির্মাণ, সাজসজ্জায় প্রস্তুতিও এগিয়ে চলেছে পুরোদমে। নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। ইতোমধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে ৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হতে চলেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন।

দলীয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল যশোর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সদস্য সচিব হন। ওই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হলেও পেরিয়ে যায় ৬ বছর।

শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলছেন, এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করার কারণে আন্দোলন ও কমিটি গঠন ঝিমিয়ে পড়ে। গত বছর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে দলীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে থাকেন। সেই থেকে প্রায় প্রতিদিন ছোট-বড় বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে দলটির।

এরই মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইসহককে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের বিএনপি’র নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। একইদিন নির্বাচন কমিশন খসড়া ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকার ওপর আপত্তি গ্রহণ করা হয়। একইদিন সন্ধ্যা ৭টায় চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রয়, বেলা ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়। এদিন বেলা ২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিকেল ৪টায় বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যশোর মুন্সী মেহেরুল্লাহ ময়দানের আলমগীর সিদ্দিকী হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, তফসিল ঘোষণার আগে আলোচনায় ছিল কঠিন সময়ে দলকে ধরে রাখার পুরস্কার হিসেবে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হতে যাচ্ছেন আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোয় পাল্টে গেছে সমীকরণ। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নেওয়া চারজনের মধ্যে তিন প্রার্থী উঠে এসেছেন সভাপতির লড়াইয়ে। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে থেকে যাওয়ায় একমাত্র প্রার্থী হিসেবে যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন নির্বাচিত হতে চলেছেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রার্থী তালিকা অনুসারে সভাপতি পদে দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান এবং যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম মারুফ প্রার্থী হয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের ৩টি পদে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এরা হচ্ছেন : নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য পদত্যাগী সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, যশোর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম ও সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল বারী রবু।

নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. ইসহক জানান, জেলার সকল উপজেলা ও পৌর বিএনপির ১৬টি সাংগঠনিক ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটির মোট এক হাজার ৬১৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রদানের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের জন্য তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। তবে ইতোমধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে এক প্রার্থী হওয়ায় দেলোয়ার হোসেন খোকনের বিজয় সুনিশ্চিত। শুধু ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। ২২ ফেব্রুয়ারি তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক খোকন

নার্গিস বেগম সরে দাঁড়ানোয় বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি পদে নতুন সমীকরণ

আপডেট সময় : ০১:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রতিবেদক
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। প্রতিদিনই হচ্ছে প্রচার মিছিল। মঞ্চ নির্মাণ, সাজসজ্জায় প্রস্তুতিও এগিয়ে চলেছে পুরোদমে। নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। ইতোমধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে ৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হতে চলেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন।

দলীয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল যশোর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সদস্য সচিব হন। ওই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হলেও পেরিয়ে যায় ৬ বছর।

শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলছেন, এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করার কারণে আন্দোলন ও কমিটি গঠন ঝিমিয়ে পড়ে। গত বছর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে দলীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে থাকেন। সেই থেকে প্রায় প্রতিদিন ছোট-বড় বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে দলটির।

এরই মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইসহককে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের বিএনপি’র নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। একইদিন নির্বাচন কমিশন খসড়া ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকার ওপর আপত্তি গ্রহণ করা হয়। একইদিন সন্ধ্যা ৭টায় চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রয়, বেলা ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়। এদিন বেলা ২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিকেল ৪টায় বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যশোর মুন্সী মেহেরুল্লাহ ময়দানের আলমগীর সিদ্দিকী হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, তফসিল ঘোষণার আগে আলোচনায় ছিল কঠিন সময়ে দলকে ধরে রাখার পুরস্কার হিসেবে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হতে যাচ্ছেন আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোয় পাল্টে গেছে সমীকরণ। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নেওয়া চারজনের মধ্যে তিন প্রার্থী উঠে এসেছেন সভাপতির লড়াইয়ে। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে থেকে যাওয়ায় একমাত্র প্রার্থী হিসেবে যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন নির্বাচিত হতে চলেছেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রার্থী তালিকা অনুসারে সভাপতি পদে দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান এবং যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম মারুফ প্রার্থী হয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের ৩টি পদে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এরা হচ্ছেন : নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য পদত্যাগী সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, যশোর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম ও সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল বারী রবু।

নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. ইসহক জানান, জেলার সকল উপজেলা ও পৌর বিএনপির ১৬টি সাংগঠনিক ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটির মোট এক হাজার ৬১৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রদানের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের জন্য তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। তবে ইতোমধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে এক প্রার্থী হওয়ায় দেলোয়ার হোসেন খোকনের বিজয় সুনিশ্চিত। শুধু ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। ২২ ফেব্রুয়ারি তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করতে পারবেন বলে আশাবাদী।