অভয়নগরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমিসহ বাড়ি দখল ও নির্যাতনের অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০১:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে

filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; captureOrientation: 0; brp_mask:0; brp_del_th:null; brp_del_sen:null; delta:null; module: video;hw-remosaic: false;touch: (-1.0, -1.0);sceneMode: 0;cct_value: 0;AI_Scene: (-1, -1);aec_lux: 0.0;aec_lux_index: 0;albedo: ;confidence: ;motionLevel: -1;weatherinfo: null;temperature: 44;
যশোরের অভয়নগরে এক হিন্দু পরিবারের জমিসহ বাড়ি দখল ও অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই পরিবারের দাবি স্থানীয় বিএনপি নেতার দুই ছেলে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তাদের জমি দখল করে নেয়। এ নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে তাদের অভিযোগ।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌরসভার প্রফেসারপাড়া মহিলা কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা পরিমল কান্তি কর্মকার, তার ছেলে পিয়াস কর্মকার ও স্ত্রী বিউটি কর্মকার। ২০১৭ সাল থেকে নির্যাতনের শিকার পরিবারটি বসতভিটা ছাড়া হয়ে গত সাত বছর যশোর শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিয়াস কর্মকার বলেন, বিএনপি নেতা এফএম আলাউদ্দিন আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি ও তার পরিবার ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমাদের পরিবারের উপর নানাভাবে শারীরিক লাঞ্ছনা, হেয় প্রতিপন্ন করা ও অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধন করে আসছিলেন। তাদের অত্যাচারে আমাদের সেখানে বসবাস করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিএনপি নেতা এফএম আলাউদ্দিনের ছোট ছেলে এফএম রাব্বি ও তার গুন্ডাবাহিনী আমাদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে।
তিনি জানান, বিএনপি নেতা এফএম আলাউদ্দিনের দুই ছেলে এফএম রাজু আহমেদ ও এফএম রাব্বি এলাকায় ক্যাডারভিত্তিক সন্ত্রাস ও ত্রাস কায়েম করেছে। তারা বর্তমানে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা ও মূর্তিমান আতঙ্ক। এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে আমার মা বিউটি কর্মকার বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করতে বাধ্য হন, যে মামলাটি এখনো চলমান আছে। এরপর থেকে আমরা প্রাণভয়ে নিজ বসতভিটা ছাড়া হয়ে রয়েছি।
ভুক্তভোগী পরিমল কর্মকার ও পিয়াস কর্মকার আরও বলেন, আমার পরিবার মামলা করায় আলাউদ্দিন পরিবার ক্রোধান্বিত হযে আমাদের পরিবারের উপর নানাবিধ হুমকি ধামকি এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। ২০১৭ সাল থেকে যশোর শহরে বসবাস শুরু করার পর থেকে আমাদের অভয়নগরের বাড়িটি তালা দেওয়া ছিল।
সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমার পিতা পরিমল কান্তি জানতে পারেন যে, এফএম আলাউদ্দিনের দুই ছেলে, তার পিতা বিএনপি নেতা এফ এম আলাউদ্দিন ও চাচা থানা বিএনপি নেতা এফএম গিয়াস উদ্দিনের ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমাদের বসতবাড়িটি দখল করে নেয় ও সেখানে তালা লাগিয়ে রেখেছে। আমার বাবা তাৎক্ষণিক বাড়িতে গিয়ে দেখতে পারেন যে বাড়িতে তালা দেওয়া আছে এবং আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করার সাথে সাথে আলাউদ্দিনের দুই ছেলে এফএম রাজু আহমেদ ও এফএম রাব্বি ও তাদের গুন্ডাবাহিনী আমাদের বাসায় প্রবেশ করে এবং আমার বাবা পরিমল কান্তি কর্মকারের উপর হামলা করে ও তাকে নির্মমভাবে ইট দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এরপর তাকে টেনে হেঁচড়ে তাদের বাসার একটি কক্ষে আটকে রাখে ও দফায় দফায় পিটিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায় ও হত্যাচেষ্টা করে। এছাড়া নগদ দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
পরবর্তীতে এক পর্যায়ে আমার বাবা বুদ্ধিমত্তা ও সুযোগ পেয়ে তাদের নিচতলার ওই ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলে আসেন। পরবর্তীতে অত্যন্ত আহত অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও পর্যন্ত আমাদের বসতবাড়িটি তালাবদ্ধ করে রেখেছে অভিযুক্তরা। আমার পরিবার কোনো আইনি সহায়তা পাচ্ছে না। এমনকি অভয়নগর থানা পুলিশের নিকট যেতেও আমাদের বাঁধা এবং ভয়ভীতি দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা এফএম আলাউদ্দিন বলেন, পরিমল বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় অনেকের নামে মামলা করে হয়রানি করেছিল। সেই মামলা মীমাংসার নামে তারা মোটা অংকের টাকা নেয়। এরপর তারা বাড়িটি একটি ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দিয়ে যশোরে চলে যান। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক বাড়িতে তালা মেরে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সকলে জানি জমি ও বাড়ি পরিমলের। আমরা কেন সেটা দখল করতে যাব। পরিমল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এলাকায় আসলে পাওনাদারেরা তাকে মারপিট করে। বরং খবর পেয়ে আমি তাকে উদ্ধার করে যশোরে পাঠিয়েছি। স্থানীয়দের সাথে তার যে সমস্যা আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে দেব।