ঢাকা ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিকট শব্দ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে

লেপ-তোষকের কারখানা-শোরুমে আগুনে কোটি টাকা ছাই

প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:১৯:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২৫ বার পড়া হয়েছে

লেপ-তোষকের কারখানা ও শোরুমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায় -কপোতাক্ষ

যশোরে একটি লেপ-তোষকের কারখানা ও শোরুমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজ (শুক্রবার) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহরতলী ধর্মতলা বাজারের মনজু বেডিংয়ে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আধাঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীর।

ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহরতলী ধর্মতলা এলাকায় তিন ব্যবসায়ী অংশদারিত্বের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন বেডিং সামগ্রির ব্যবসা করে আসছিলেন। শুক্রবার সকাল থেকে প্রতিদিনের মতো শোরুম ও কারখানা খুলে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। জুম্মার দিন হওয়ায় দুপুর ১২টার দিকে নামাজ ও খাওয়ার জন্য শোরুম ও কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যান। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কারখানা থেকে ধোঁয়া বের হতে শুরু করে। এরপর বিকট শব্দ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানা ও শোরুমে। স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে যশোর ফায়ার স্টেশন ও যশোর ক্যান্টনমেন্টস্থ শানতলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিটের পাঁচটি গাড়ি আধা ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় শোরুমে আগুন নেভাতে যেয়ে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তারা।

মনজু বেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মেহেদি হাসান মনজু জানান, বেলা ১২টা পর্যন্ত সব স্বাভাবিক ছিল। শুক্রবার বলে বাসায় চলে যান। সাড়ে ১২টার দিকে তার কাছে খবর আসে, দোকানে আগুন লেগে সব পুড়ে যাচ্ছে। এসে দেখেন সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, কাপড়, বেডসিট, লেপ তোষক, নারিকেলের ছোবড়া, তুলা থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করছি, বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও জানান, গত চার দিন আগেও ২০ লাখ টাকার মালামাল তুলেছি। সেগুলো এখনও খুলতে পারিনি। এছাড়া বিভিন্ন উন্নতমানের সেলাইমেশিন যন্ত্রাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একদিকে নিজের কারখানা আর শোরুমের তৈরিকৃত মালামাল আর বিভিন্ন লোকজনের অর্ডার নেওয়া মালামাল পুড়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। রঙিন কাপড় আর তুলা এখন পুড়ে কালো ছাই হয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আরআরএফ, ঢাকা ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। এখন তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

এদিকে বেডিং কারখানা ও শোরুমে মালামাল দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনে পুড়তে থাকা মালামাল রক্ষা করতে শ্রমিক ও স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেন। তবে রক্ষা করতে না পেরে ভস্মীভূত হওয়া দোকানের পাশেই আহাজারি করতে দেখা গেছে তাদের। এসময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এসময় উৎসুক জনতাও ভিড় করেন সেখানে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের উপ সহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, যশোরের দুটি স্টেশনের দুটি ইউনিট আধাঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। টিন দিয়ে নির্মিত শোরুম আর কারখানা পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ধারণা করছি সিগারেটের আগুন বা বিদ্যুতের সটসার্কিট থেকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়ীরা কোটি টাকা মালামাল ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিকট শব্দ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে

লেপ-তোষকের কারখানা-শোরুমে আগুনে কোটি টাকা ছাই

আপডেট সময় : ০২:১৯:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যশোরে একটি লেপ-তোষকের কারখানা ও শোরুমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজ (শুক্রবার) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহরতলী ধর্মতলা বাজারের মনজু বেডিংয়ে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আধাঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীর।

ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহরতলী ধর্মতলা এলাকায় তিন ব্যবসায়ী অংশদারিত্বের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন বেডিং সামগ্রির ব্যবসা করে আসছিলেন। শুক্রবার সকাল থেকে প্রতিদিনের মতো শোরুম ও কারখানা খুলে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। জুম্মার দিন হওয়ায় দুপুর ১২টার দিকে নামাজ ও খাওয়ার জন্য শোরুম ও কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যান। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কারখানা থেকে ধোঁয়া বের হতে শুরু করে। এরপর বিকট শব্দ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানা ও শোরুমে। স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে যশোর ফায়ার স্টেশন ও যশোর ক্যান্টনমেন্টস্থ শানতলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিটের পাঁচটি গাড়ি আধা ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় শোরুমে আগুন নেভাতে যেয়ে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তারা।

মনজু বেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মেহেদি হাসান মনজু জানান, বেলা ১২টা পর্যন্ত সব স্বাভাবিক ছিল। শুক্রবার বলে বাসায় চলে যান। সাড়ে ১২টার দিকে তার কাছে খবর আসে, দোকানে আগুন লেগে সব পুড়ে যাচ্ছে। এসে দেখেন সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, কাপড়, বেডসিট, লেপ তোষক, নারিকেলের ছোবড়া, তুলা থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করছি, বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও জানান, গত চার দিন আগেও ২০ লাখ টাকার মালামাল তুলেছি। সেগুলো এখনও খুলতে পারিনি। এছাড়া বিভিন্ন উন্নতমানের সেলাইমেশিন যন্ত্রাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একদিকে নিজের কারখানা আর শোরুমের তৈরিকৃত মালামাল আর বিভিন্ন লোকজনের অর্ডার নেওয়া মালামাল পুড়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। রঙিন কাপড় আর তুলা এখন পুড়ে কালো ছাই হয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, আরআরএফ, ঢাকা ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। এখন তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

এদিকে বেডিং কারখানা ও শোরুমে মালামাল দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনে পুড়তে থাকা মালামাল রক্ষা করতে শ্রমিক ও স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেন। তবে রক্ষা করতে না পেরে ভস্মীভূত হওয়া দোকানের পাশেই আহাজারি করতে দেখা গেছে তাদের। এসময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এসময় উৎসুক জনতাও ভিড় করেন সেখানে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের উপ সহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, যশোরের দুটি স্টেশনের দুটি ইউনিট আধাঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। টিন দিয়ে নির্মিত শোরুম আর কারখানা পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ধারণা করছি সিগারেটের আগুন বা বিদ্যুতের সটসার্কিট থেকে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়ীরা কোটি টাকা মালামাল ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।