ঢাকা ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝোলানো নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত

প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:৪০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউপিতে তালা ঝোলানো নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষেও পর সেনাবাহিনী-পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে -কপোতাক্ষ

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝোলানো নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ (বুধবার) দুপুরে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বিএনপির একাংশ এই তালা ঝোলানোর চেষ্টা করে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্তকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়ার জন্য অফিসে তালা লাগানো হয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রাথী হিসেবে জয়লাভ করেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের ভাই। তাদের বাবা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার কাজী রফিকুল ইসলাম।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির ইউনিয়ন সভাপতি আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। সেখানে তারা শ্লোগান দেন স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের সহযোগী মোস্তাফিজুল ইসলামকে কোনোভাবেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তারা মেনে নেবেন না। তারা আরও দাবি জানান, কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকে এই চেয়ারে বসতে দেবেন না। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া লোকজন ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আকরাম হোসেনের সমর্থক।

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে তালা লাগানোর পর গ্রামবাসী দলবদ্ধ হয়ে ঐ তালা ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় এলাকার বিএপির একাংশের নেতা আমানত আলী ও তার সমর্থকদের নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে যোগ দেন। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে বিএনপি’র পক্ষে ইউনুস হোসেন (৩২), আবু সাঈদ (৩০), নাঈম হোসেন (২২), রকি (৩২), আকাশ (২৫), রনি (৩২), সাগর (২৭) আহত হন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলামের পক্ষে মুজাহিদুল ইসলাম (৪৪) মাজাহারুল ইসলাম (৪২), গোলাম মোস্তফা (৪৫) আহত হন। তাদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় মুজাহিদুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফাকে খুলনা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের কারো মাথা ফেটেছে, কারো হাত এবং পা ভেঙ্গে গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম জানান, জনগণ তালা খুলে দেওয়ার সময় বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেনের কিছু সন্ত্রাসী জনগণের উপর হামলা করে। সে সময় এলাকার জনগণ দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে। প্রায় ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদস্যগণ, কেশবপুর থানার পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বিএনপির ইউনিয়ন সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম ৫ আগস্টের পরে ঐ চেয়ারে বসে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপতৎপরতায় লিপ্ত আছেন। বিভিন্ন সময় তিনি বিএনপিসহ এই সরকারের নামে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল। সে কারণেই ইউনিয়ন পরিষদে তাকে আর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হবে না বলে এলাকার মানুষজন ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। তিনি দাবি করেন ঐ তালা চেয়ারম্যান পক্ষের লোকজন ভেঙে ফেলতে গেলে তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

কেশবপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝোলানো নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত

আপডেট সময় : ০২:৪০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝোলানো নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ (বুধবার) দুপুরে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বিএনপির একাংশ এই তালা ঝোলানোর চেষ্টা করে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্তকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়ার জন্য অফিসে তালা লাগানো হয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রাথী হিসেবে জয়লাভ করেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের ভাই। তাদের বাবা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার কাজী রফিকুল ইসলাম।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপির ইউনিয়ন সভাপতি আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। সেখানে তারা শ্লোগান দেন স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের সহযোগী মোস্তাফিজুল ইসলামকে কোনোভাবেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তারা মেনে নেবেন না। তারা আরও দাবি জানান, কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকে এই চেয়ারে বসতে দেবেন না। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া লোকজন ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আকরাম হোসেনের সমর্থক।

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে তালা লাগানোর পর গ্রামবাসী দলবদ্ধ হয়ে ঐ তালা ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় এলাকার বিএপির একাংশের নেতা আমানত আলী ও তার সমর্থকদের নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে যোগ দেন। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে বিএনপি’র পক্ষে ইউনুস হোসেন (৩২), আবু সাঈদ (৩০), নাঈম হোসেন (২২), রকি (৩২), আকাশ (২৫), রনি (৩২), সাগর (২৭) আহত হন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলামের পক্ষে মুজাহিদুল ইসলাম (৪৪) মাজাহারুল ইসলাম (৪২), গোলাম মোস্তফা (৪৫) আহত হন। তাদের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় মুজাহিদুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফাকে খুলনা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের কারো মাথা ফেটেছে, কারো হাত এবং পা ভেঙ্গে গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম জানান, জনগণ তালা খুলে দেওয়ার সময় বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেনের কিছু সন্ত্রাসী জনগণের উপর হামলা করে। সে সময় এলাকার জনগণ দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে। প্রায় ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদস্যগণ, কেশবপুর থানার পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বিএনপির ইউনিয়ন সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম ৫ আগস্টের পরে ঐ চেয়ারে বসে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপতৎপরতায় লিপ্ত আছেন। বিভিন্ন সময় তিনি বিএনপিসহ এই সরকারের নামে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল। সে কারণেই ইউনিয়ন পরিষদে তাকে আর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হবে না বলে এলাকার মানুষজন ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেন। তিনি দাবি করেন ঐ তালা চেয়ারম্যান পক্ষের লোকজন ভেঙে ফেলতে গেলে তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

কেশবপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।