বিচারপ্রার্থীদের সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় হওয়ায় জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি
যশোরে গ্রাম আদালতে ১১ মাসে দেড় হাজার মামলা নিষ্পত্তি, ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অর্থদন্ড আদায়

- আপডেট সময় : ০৪:০৪:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে

গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভা যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় -কপোতাক্ষ
পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, বিবাহ বিচ্ছেদ, খোরপোষ, গ্রাম্য মারামারি থেকে শুরু করে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত সব ধরনের দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা মীমাংসা করে প্রশংসা কুড়াচ্ছে যশোরের গ্রাম আদালতের বিচারকরা। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়ায় গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা দিন দিন বাড়ছে। এতে প্রচলিত আদালতের প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমতে শুরু করেছে। ফলে সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের সময়, শ্রম ও অর্থ যেমন সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনি দূর হচ্ছে ভোগান্তি। এসব কারনে যশোরে দিন দিন জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম।
আজ (রবিবার) যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভায় এমন চিত্রই ফুটে ওঠে।
সভায় তথ্যচিত্র তুলে ধরে গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করা হয়, গত ১১ মাসে যশোরের ৮ উপজেলার ৯৩টি গ্রাম আদালতে মোট ১৫শ’ ৬৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ২২০টি মামলা জেলা আদালত থেকে নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম আদালতে পাঠানো হয়। বাকি মামলাগুলো স্থানীয়ভাবে দায়ের করা। এই সময়ের মধ্যে ১৪শ’ ৯১টি মামলা নিষ্পত্তি করে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা অর্থদন্ডপূর্বক তা আদায় করে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বিলিবন্টন করা হয়েছে। গড়ে প্রতিটি মামলা ২৩ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক রফিকুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার ও ৮ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন সুলতানা, মনিরামপুরের নিশাত তামান্না, সিনিয়র সাংবাদিক নূর ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রকল্পের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের ডিস্ট্রিক ম্যানেজার অ্যাড. মহিতোষ রায়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম বলেন, গ্রামে অনেক ছোট খাটো ঘটনা ঘটলেও এখনও কিছু মানুষ তার প্রতিকার চাইতে থানা বা জেলা আদালতে আসেন যাতে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয় এবং এতে করে তারা আরও সমস্যায় জড়িয়ে পড়েন। আদালতে সৃষ্টি হয় মামলার জট। এ জাতীয় ছোটখাটো সমস্যা স্বল্পসময়ে, অল্প খরচে গ্রাম আদালতেই নিষ্পত্তি করা যায়। বর্তমান সরকার গ্রাম আদালত কার্যকর করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ও সক্রিয়। এক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং আসুন আমরা সবাই মিলে গ্রাম আদালতকে কার্যকর করে তুলি।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, উচ্চতর আদালতের মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালত কার্যকর করার বিকল্প নেই। ইউপি সচিবদের আরও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের কার্যকর সহায়তা দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।