ঢাকা ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে যশোরের শহীদ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রি বিতরণ যশোরে অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা যশোরে শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে গণপিটুনি গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল কলেজছাত্রের গাজায় নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে যশোরে সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিক্ষোভ ফিলিস্তিনে বর্বর হামলার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ যশোরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী হত্যাসহ ২৪ মামলার আসামি ভাইপো রাকিব আটক যশোরে চাচাতো বোনকে ধর্ষণের দায়ে যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আত্মসাতকৃত তিন হাজার বস্তা সরকারি ইউরিয়া সার উদ্ধার, গ্রেফতার তিন

যবিপ্রবিতে সংঘর্ষের পর অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস -কপোতাক্ষ ফাইল ছবি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসাথে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শনিবার বিকেলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এর আগে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফটকের সামনে চায়ের দোকানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে প্রক্টর ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৮ জন আহত হন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেমি প্রকৌশলী বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকা শাহানী উর্মির সাথে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপনের ধাক্কা লাগে। স্বপন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করেন। এরপর তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে প্রধান ফটকের সামনে সাদেকার বন্ধুরা সিএসই বিভাগ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তখন কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা সাদেকার বন্ধু ও বৈষম্যবিবোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব আহমেদ শানকে ডেকে নেয়। এটা দেখে সাদেকা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মীদের ফোনে জড়ো করেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করতে সেখানে হাজির হন প্রক্টর আমজাদ হোসেন। উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে প্রক্টর আমজাদ হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত শহরে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া সংঘর্ষে আহত উভয় পক্ষের আটজনের মধ্যে চারজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এঘটনায় ডিনস কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. জাফিরুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাদেকা শাহানী ঊর্মি বলেন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিবকে বহিষ্কারের সূত্র করে ক্যাম্পাসে মারামারি হয়েছে। ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ধারণা করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অধ্যাপক ড. গালিবকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এজন্য তারা আমাদের টার্গেট করে হামলা করার চেষ্টা করছে। শুক্রবার প্রতিরোধ করায় অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। ফ্যাসিস্টের দোসররা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার ব্যাচমেট হাবিবসহ কয়েকজন চায়ের দোকানে বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। তখন সিএসই বিভাগের স্বপনের সাথে আমার ধাক্কা লাগে। আমি বিরক্ত হলে স্বপন ও তার এক বন্ধু সরি বলে। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে কম্পিউটার বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী হাবিবকে ডাকে। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে আমি হলে চলে যাই। আমাকে ফোন করে বলা হয়, প্রক্টর অফিসে স্যার ডাকছেন। আমি প্রক্টর অফিসে যাই। সেখানে যাওয়ার পর দেখি বাইরে শিক্ষার্থীরা চিৎকার চলছে। আমার সহপাঠীরা বেরিয়ে এলে তাদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষ হয়।

পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম এস লিমন বলেন, ঊর্মি আপুর সঙ্গে ঘটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য সরি বলায় ওখানেই মিটে গেছে। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে হাবিব আহমেদ শান ভাই কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গালিগালাজ করেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষে বেঁধে যায়।

তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব স্যারের বহিষ্কারের বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এজন্য বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা শুক্রবার দুপুরে প্রতিবাদ করেছি। আমরা বলেছি, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তদন্তের ভিত্তিতে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। আমরা ড. গালিব স্যারের বহিষ্কারের প্রতিবাদ করায় আমাদের উপর তারা ক্ষুব্ধ ছিল। স্বৈরাচারের দোসরের সঙ্গে আমাদের আপস নেই। আমরাও স্বৈরাচারের দোসরের বিচার চাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, শুক্রবার যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। দায়িত্বশীল শিক্ষার্থীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ নয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো কমিটি নেই। সাংগঠনিক কাঠামো নেই। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই একজন কর্মী ছিল। আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে স্বৈরাচারের ইস্যুতে কোনো আপস নেই। সংঘর্ষের ঘটনায় কারা ইন্ধন দিয়েছে তদন্ত হওয়া উচিত।

কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আহ্বানে পুলিশ রাতে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি, কাউকে আটক করা হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন জানান, আমার ধারণা, এই সংঘর্ষের নেপথ্যে ডক্টর গালিবের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি থাকতে পারে। তা না হলে শুধুমাত্র চায়ের দোকানে দুই শিক্ষার্থীর সাথে তুচ্ছ কথা কাটাকাটির ঘটনায় ক্যাম্পাসে এতবড় সংঘর্ষ ঘটনা ঘটার কথা না। রাতেই সকল সহকারী প্রক্টর একসাথে হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন-সমাবেশ করা যাবে না। করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যবিপ্রবি ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল মজিদ বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

যবিপ্রবিতে সংঘর্ষের পর অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসাথে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা শনিবার বিকেলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এর আগে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফটকের সামনে চায়ের দোকানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে প্রক্টর ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৮ জন আহত হন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেমি প্রকৌশলী বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকা শাহানী উর্মির সাথে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপনের ধাক্কা লাগে। স্বপন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করেন। এরপর তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে প্রধান ফটকের সামনে সাদেকার বন্ধুরা সিএসই বিভাগ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তখন কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা সাদেকার বন্ধু ও বৈষম্যবিবোধী আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব আহমেদ শানকে ডেকে নেয়। এটা দেখে সাদেকা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মীদের ফোনে জড়ো করেন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করতে সেখানে হাজির হন প্রক্টর আমজাদ হোসেন। উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে প্রক্টর আমজাদ হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত শহরে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া সংঘর্ষে আহত উভয় পক্ষের আটজনের মধ্যে চারজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এঘটনায় ডিনস কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. জাফিরুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সাদেকা শাহানী ঊর্মি বলেন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিবকে বহিষ্কারের সূত্র করে ক্যাম্পাসে মারামারি হয়েছে। ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ধারণা করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অধ্যাপক ড. গালিবকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এজন্য তারা আমাদের টার্গেট করে হামলা করার চেষ্টা করছে। শুক্রবার প্রতিরোধ করায় অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। ফ্যাসিস্টের দোসররা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার ব্যাচমেট হাবিবসহ কয়েকজন চায়ের দোকানে বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম। তখন সিএসই বিভাগের স্বপনের সাথে আমার ধাক্কা লাগে। আমি বিরক্ত হলে স্বপন ও তার এক বন্ধু সরি বলে। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে কম্পিউটার বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী হাবিবকে ডাকে। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে আমি হলে চলে যাই। আমাকে ফোন করে বলা হয়, প্রক্টর অফিসে স্যার ডাকছেন। আমি প্রক্টর অফিসে যাই। সেখানে যাওয়ার পর দেখি বাইরে শিক্ষার্থীরা চিৎকার চলছে। আমার সহপাঠীরা বেরিয়ে এলে তাদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষ হয়।

পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম এস লিমন বলেন, ঊর্মি আপুর সঙ্গে ঘটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য সরি বলায় ওখানেই মিটে গেছে। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে হাবিব আহমেদ শান ভাই কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গালিগালাজ করেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষে বেঁধে যায়।

তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব স্যারের বহিষ্কারের বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এজন্য বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা শুক্রবার দুপুরে প্রতিবাদ করেছি। আমরা বলেছি, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তদন্তের ভিত্তিতে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। আমরা ড. গালিব স্যারের বহিষ্কারের প্রতিবাদ করায় আমাদের উপর তারা ক্ষুব্ধ ছিল। স্বৈরাচারের দোসরের সঙ্গে আমাদের আপস নেই। আমরাও স্বৈরাচারের দোসরের বিচার চাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, শুক্রবার যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। দায়িত্বশীল শিক্ষার্থীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ নয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো কমিটি নেই। সাংগঠনিক কাঠামো নেই। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই একজন কর্মী ছিল। আমাদের সবাইকে সতর্ক হতে হবে স্বৈরাচারের ইস্যুতে কোনো আপস নেই। সংঘর্ষের ঘটনায় কারা ইন্ধন দিয়েছে তদন্ত হওয়া উচিত।

কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আহ্বানে পুলিশ রাতে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি, কাউকে আটক করা হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আমজাদ হোসেন জানান, আমার ধারণা, এই সংঘর্ষের নেপথ্যে ডক্টর গালিবের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি থাকতে পারে। তা না হলে শুধুমাত্র চায়ের দোকানে দুই শিক্ষার্থীর সাথে তুচ্ছ কথা কাটাকাটির ঘটনায় ক্যাম্পাসে এতবড় সংঘর্ষ ঘটনা ঘটার কথা না। রাতেই সকল সহকারী প্রক্টর একসাথে হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন-সমাবেশ করা যাবে না। করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যবিপ্রবি ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল মজিদ বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।