তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণ
ব্যতিক্রমী খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনী দেখে উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করলেন ডিসি

- আপডেট সময় : ০৯:৪৪:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৬৫ বার পড়া হয়েছে
নারী উদ্যোক্তা ইয়াসমিন সুলতানা কাজ করেন হোম মেড খাবার নিয়ে। তিনি নিয়ে এসেছিলেন ‘ড্রাই টমেটো’, ‘বেগুনের আচার’, ‘পিঁয়াজু মিক্সড’, ‘ড্রাই সরিষা’, ‘কাঁচা মরিচ পেস্ট’। আরেক উদ্যোক্তা মাহফুজা মুক্তা নিয়ে এসেছিলেন, ‘গোলাপ ফুলের জেলি’, নানা ধরনের আচার ও হোম মেড গুড়ো মসলা। উদ্যোক্তা শাহনাজ পারভীন এনেছিলেন, ‘করলার আচার’, ‘চালতার আচার’, বিভিন্ন ধরনের সবজির আচার! উদ্যোক্তাদের এই রকমারি খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনীতে মুগ্ধ হন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।
এমন হরেক রকম ব্যতিক্রমী খাদ্য ও কৃষিপণ্যের প্রদর্শনীতে ভিন্ন এক আবহ সৃষ্টি হয় তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণের সমাপনী আয়োজনে। আজ (রোববার) যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড মিলনায়তনে এই সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা শাহনাজ পারভীন জানালেন, তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজির আচার তৈরি করেন। গুণে ও মানে এই খাদ্যপণ্য মানুষের মাঝে ভিন্ন আবেদন সৃষ্টি করেছে। ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি এই খাদ্য পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি বাজারজাতকরণেরও নানান পদ্ধতি শিখেছেন। একই ধরনের অভিব্যক্তি জানালেন উদ্যোক্তা ইয়াসমিন সুলতানা। শাহনাজ পারভীন জানালেন, আমি বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে আচার তৈরি করছি। এমনকি মাংসের আচারও তৈরি করছি। এগুলো খাদ্য উপাদান হিসেবে ভিন্ন মাত্রা সৃষ্টি করবে। বৈচিত্র্যময় খাবার হিসেবে মানুষ এতে আগ্রহী হবে।
শুধু ইয়াসমিন সুলতানা, শাহনাজ পারভীন বা মাহফুজা মুক্তাই নন; প্রত্যেক উদ্যোক্তাই এমন ভিন্নতার সমাহার নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই প্রদর্শনী মঞ্চে।
যশোরে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে রোববার তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের ১২ দিনব্যাপি এই ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার-ডিএএম অঙ্গ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’র আয়োজনে দুটি ব্যাচে ৫০ জন তরুণ ও নারী উদ্যোক্তা এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
যশোর শহরের ধর্মতলা এলাকার ‘প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’ মিলনায়তনে প্রশিক্ষণের সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। তিনি উদ্যোক্তাদের এই রকমারি খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনীতে মুগ্ধ হন। উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, উদ্যোক্তা হিসেবে আপনারা যে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তা কাজে লাগাতে হবে। মানুষের পছন্দ-চাহিদা যদি বুঝতে পারেন, তাহলে দ্রুতই সাফল্য ধরা দেবে। ব্যতিক্রমী খাদ্যপণ্য তৈরি করে প্রচার ও পসার ঘটাতে হবে। কোয়ালিটি খাদ্যপণ্য ছড়িয়ে দিতে পারলে উদ্যোক্তাদের পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
প্রিজম এগ্রো এন্ড ফুড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুসলিমা খাতুনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর খুলনার উপপরিচালক (উপ-সচিব) শাহনাজ বেগম ও জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রিজম হোটেল ম্যানেজমেন্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান বশির আহমেদ চন্দন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্যোক্তাদের খাদ্যপণ্যসামগ্রীর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম এবং পরে তিনি উদ্যোক্তাদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।
প্রিজম হোটেল ম্যানেজমেন্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান বশির আহমেদ চন্দন জানান, দেশব্যাপী বিশেষ করে তরুণ ও নারীদের মধ্যে কৃষি ব্যবসায় উদ্যোক্তাদের বিকাশকে উৎসাহিত করতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এটি চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ এবং ইনকিউবেশন সহায়তা প্রদানের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে।