Take a fresh look at your lifestyle.

যশোর জেলা যুবলীগের সম্মেলন আর কবে?

0

প্রতিবেদক :
দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে হচ্ছে না যশোর জেলা যুবলীগের সম্মেলন। সবশের্ষ গতবছরের ২৩ জানুয়ারি সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে সেটা হয়নি। দীর্ঘদিন সংগঠনটির সম্মেলন না হওয়ায় নতুন পদপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে দিন দিন। কবে নাগাদ হবে তা সুনির্দিষ্ট করতে পারেনি সংগঠনের জেলার শীর্ষ নেতারাও। এদিকে কয়েকদফা সম্মেলন হবে এই আশায় সক্রিয় হয়েছিলেন যেসব নেতারা, তারা রীতিমতো হতাশ। তবে সম্প্রতি খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় সম্মেলনের তারিখ চুড়ান্ত হওয়ায় নতুন করে উজ্জী¡বিত হয়েছেন পদপ্রত্যার্শী নেতারা। তাদের দাবি, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে ত্যাগী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে এবং নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে এমনটাই আশা।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আল সাইফুল সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় নেতাকর্মীদের ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে যুবলীগ এখন অনেক মানবিক শক্তিশালী। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে বলেই গতবছর তো যশোরে বর্ধিতসভা করেছিলাম। তারিখ চুড়ান্ত হলেও করোনার কারণে সেটি হয়নি। নতুন করে বিভিন্ন জেলায় তারিখ চুড়ান্ত হয়েছে। যশোরেও দ্রæত সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূল নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই তারুণ্যনির্ভর একটা নেতৃত্ব তৈরি করা হবে।

২০০৩ সালের ১৯ জুলাই যশোর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। এতে মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরীকে সভাপতি ও জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা যুবলীগের কমিটি হয়। ৫৩ সদস্যের এই কমিটির মেয়াদ ২০০৬ সালে শেষ হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ১৭ বছর। একই অবস্থা উপজেলা যুবলীগের কমিটিগুলোতে। তিনমাসের আহ্বায়ক কমিটিতে ছয় বছর পার হয়েছে সবগুলো উপজেলায়। ২০১৭ সালের ২১ মার্চ যশোর সদর ও শহর যুবলীগ, ২৯ মার্চ বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলা এবং এপ্রিল ও মে মাসে মণিরামপুর, কেশবপুর, চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলা যুবলীগের তিনমাস মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় যুবলীগ। তিনমাসের সেই আহ্বায়ক কমিটি ৫ বছর পার করেছে। দীর্ঘদিন পর গতবছরের ১ ডিসেম্বর যশোর জেলা যুবলীগের বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ জানুয়ারি যশোরে জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। এরপর ৩ থেকে ৬ জানুয়ারির মধ্যে যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপিসহ জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা দিতে বলা হয়।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মী ও পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছিল হতাশা। সর্বশেষ গত বছরের ২৩ জানুয়ারি সম্মেলনের দিন ঘোষণা করা হলে নেতা-কর্মীরা নড়েচড়ে বসেন। অনেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জীবনবৃত্তান্ত পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ওই সম্মেলন স্থগিত করা হয়। খুলনাসহ আশেপাশের কয়েকটি জেলায় আবার নতুন করে সম্মেলন হওয়ার খবরে নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বসিত।

যশোরে সভাপতি-সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে আলোচনায় আছেন জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ রায়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল, পৌর কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী প্রমুখ।

সূত্রের দাবি, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দৃশ্যমান দুটি গ্রুপ রয়েছে। গ্রুপ রাজনীতির বিষয়টি মাথায় রেখে যুবলীগের কমিটিতে দু’পক্ষের নেতাকর্মী ছোট-বড় পদে স্থান পাবেন। যুবলীগের কমিটি ঘোষণার মধ্যদিয়ে যশোরে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের বিভক্তির রাজনীতির অবসান ঘটানোর বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছেন।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল বলেন, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতা থাকার পরও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মূল্যায়ন না পাওয়ায় মানসিকভাবে তারা হতাশাগ্রস্ত। নতুন করে কয়েকটি জেলায় সম্মেলনের তারিখ চুড়ান্ত হওয়ায় নতুন করে আমরা আশা করছি দ্রুতই সম্মেলনের। যারা রাজপথের উন্নয়নে দুর্দিনে জামাত বিএনপিকে রুখে দিতে পারবে; আগামী সম্মেলনে দলে সেই ধরনের নেতৃত্ব আসুক।

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় আমরা হতাশ। তবে নেতৃত্বের সংকট নেই। কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে আমি যুবলীগের নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। যুবলীগের মানবিকতা আমরা জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন নেতৃত্ব গঠন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ রায় বলেন, দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়া ও মেয়াদউর্ত্তীণ হওয়ায় যশোর যুবলীগের সাংগঠনিক কোনো ভিত্তি নাই। অনেকেই জেলা আওয়ামী লীগে চলে গেছে, কেউ মারা গেছে, অনেকেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। যে কারণে নির্বাচনের আগে দলে যুবলীগ গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করবে বলেই কেন্দ্রীয় যুবলীগ জোর দিচ্ছে সম্মেলনের দিকে। আশা করছি দ্রুতই যশোরে সম্মেলন হবে। সাবেক ছাত্রলীগনেতা, সৎ ও কর্মীবান্ধব নেতাদের নিয়েই যশোর জেলা গঠন হবে। সেই যুবলীগ শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসাবে কাজ করবে। কাজ করবে মানবিক কল্যাণে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.