বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৪০ সেকেন্ডে বাংলাদেশ ও ভারতে যাত্রী পারাপার!
ই-গেইট সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করতে আজ যশোরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রতিবেদক : :
দেশে প্রথমবারের মত যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে ই-গেইট (ইলেকট্রনিক ফটক) সেবা কার্যক্রম চালু হতে যাচ্ছে। পাসপোর্টধারী নাগরিকেরা মাত্র ১৮ থেকে ৪০ সেকেন্ডে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। যেখানে এখন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করতে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। সেই ভোগান্তি নিরসনে বেনাপোল ইমিগ্রশনে চারটি ই-গেইট স্থাপন করা হচ্ছে, যা শনিবার (৪ মার্চ) বিকালে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই কার্যক্রম উদ্বোধন করতে যশোরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো স্থলবন্দরেও স্থাপিত হচ্ছে ই-গেইট সেবা কার্যক্রম। এতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের যেমন ভোগান্তি কমবে, তেমনি দালাল ও প্রতারকদের দৌরাত্মও কমে আসবে।
ই-গেইট সেবা কার্যক্রম চালু হলে ১৮ থেকে ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে
যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ হবে।
ই পাসপোর্টটি গেইটের নির্দিষ্ট স্থানে স্পর্শ করে
আঙুলের ছাপ দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গেইট খুলে যাবে।
-আহসান হাবীব. ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বেনাপোল, ইমিগ্রেশন পুলিশ
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ থেকে সাত হাজার মানুষ পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াত করছে। ঈদ ও পূজার সময়ে এই সংখ্যা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়। যাত্রীদের ইমিগ্রেশনে কাগজপত্র যাচাই বাছাই করতে দীর্ঘ সময় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে যাত্রী ভোগান্তি বাড়ে। লাইনে না দাঁড়িয়ে আগে ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে দালালচক্র যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা লেনদেন করে। এতে যাত্রীরা প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হন। যাত্রীসেবা সহজ ও নিরাপদ করতে বেনাপোল স্থলবন্দরে চারটি ই-গেইট স্থাপন করা হয়েছে। এর দুটি ভারত থকে ফেরা ও দুটি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশে ব্যবহৃত হবে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব বলেন, বেনাপোলে ই-গেইট সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করার সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে কর্মীদের ইতিমধ্যে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। এই সেবা চালু হলে ১৮ থেকে ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করা হবে। ই পাসপোর্টটি গেইটের নির্দিষ্ট স্থানে স্পর্শ করে আঙুলের ছাপ দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গেইট খুলে যাবে। এতে গমনাগম নিরাপদ হবে। মানুষের জনভোগান্তি কমবে। নাগরিক সেবা সহজ হবে।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে দেশে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের শুধু যশোর কার্যালয় থেকে একলাখ ৭০ হাজার মানুষ ই পাসপোর্টের আওতায় এসেছে। দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনও ই পাসপোর্টের আওতায় আসেনি। যে কারণে ই-গেইট সেবা কার্যক্রমের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতির সেবা কার্যক্রমও সচল থাকবে। দেশের সব পাসপার্টধারী যাত্রীদের ই পাসপোর্টের আওতায় আসতে কত সময় লাগতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ পরিচালক মেহেদী হাসান কুতুব বলেন, বর্তমানে দেশে সব জেলা পাসপোর্ট অফিসে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পাসপোর্টধারী সব মানুষকে ই পাসপোর্টের আওতায় আসতে সময় লাগবে। এখন সবাইকে ই পাসপোস্ট দেওয়া হচ্ছে।