
ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা পুরোপুরি সমাধান হয়নি, চেষ্টা করছি : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিবেদক :
যশোরের দুঃখ ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্প চালু করেছে। চারটি সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে ৩৫ কিউসেক পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভবদহে এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেন, ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে পাকিস্তান আমল থেকেই বিভিন্ন প্রকল্প চালু হয়েছে। টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। স্থানীয়দের আপত্তির কারণে সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। আমি ২০১৯ সালে ভবদহ অঞ্চল পরিদর্শন করেছিলাম। তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সমস্যা সমাধানের। আমি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪টি সেচযন্ত্র চালু করা হলো। আরও ৬টি সেচযন্ত্র সংযুক্ত করা হবে। মোট ১০টি সেচযন্ত্র চালু হলে সমস্যার সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, ভবদহের জলাবদ্ধতা পুরোপুরি সমাধান হয়নি। পুরোপুরি সমাধানের চেষ্টা চলছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ২১ ভেন্ট স্লুইচ গেটের পাশে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জলাবদ্ধ এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে ১০টি বিষয় তুলে ধরে প্রস্তাব রাখেন ভবদহ জলাবদ্ধতা নিরসন আন্দোলন কমিটির আহŸায়ক এনামুল হক বাবুল। দাবিগুলো হচ্ছে : ৪ ভেন্ট স্লুইচ গেটের দক্ষিণপাশে মশিয়াহাটি বেদভিটা খাল গভীর খনন, বেদভিটা থেকে বালিয়া খাল ৬০০ মিটার খনন, মশিয়াহাটি ও টেকা সেতুর নিচে পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রি অপসারণ, ভবদহ ২১ ভেন্ট ¯øুইচ গেট থেকে ডাউনে খর্নিয়া পর্যন্ত শ্রী নদী খনন, মুক্তেশ্বরী নদীর সম্পূর্ণ অংশ সংস্কার, আমডাঙ্গা খালে গৃহীত প্রকল্প জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন, সেচপ্রকল্পে পাম্পের সংখ্যা বৃদ্ধি, নির্মাণাধীন টেকা সেতু প্রশস্থতা বৃদ্ধি ও ২১ ভেন্ট স্লুইচ গেটের সামনে ক্রাশ বাঁধ নির্মাণ করা।
প্রস্তাবিত দাবি প্রসঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, দাবির মধ্যে অনেকগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রক্রিয়াধীন। বাকিগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ভবদহের জলাবদ্ধতা দ্রæত নিরসনকল্পে ২১ ভেন্ট স্লুইচ গেটে ৭৫ হর্সপাওয়ারের চারটি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তীতে একই হর্সপাওয়ারের আরও ৬টি পাম্প স্থাপন করা হবে। এছাড়া বিএডিসির সেচপ্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১৬টি পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধ ৯০ শতাংশ জমিতে এবার চাষাবাদ করা সম্ভব হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন, মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম শামীম হাসান, ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল, সানা আব্দুল মান্নান, শেখর চন্দ্র, হাফিজুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিষ্ণুপদ দত্ত, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জি. হাসানুজ্জামান কাজলসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসির কর্মকর্তাবৃন্দ।