যশোরে এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর
প্রতিবেদক :
যশোরে এসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। এক কামরার রেল জাদুঘরকে ঘিরে রয়েছে উপচে পড়া ভিড়। ছোট শিশু, বয়স্ক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ রেল জাদুঘর ঘুরে ঘুরে দেখছে। যশোর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুইদিনে প্রদর্শনীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার দর্শনার্থী রেল জাদুঘরটির ভেতর ঘুরে দেখেছে।
কয়েকটি জেলা ঘুরে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) যশোরে আসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকেই এটি সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর আগামী রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত একটা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। যে কেউ যশোর রেলস্টেশনে এসে বিনামূল্যে জাদুঘরটি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। জাদুঘর প্রদর্শনীর সময় প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা এবং বিকাল ৪টা থেকে রাত একটা পর্যন্ত।
১ আগস্ট গোপালগঞ্জ রেলস্টেশনে এ ব্রডগেজ রেলওয়ে জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়। বিভিন্ন জেলার রেলস্টেশন ঘুরে এখন যশোর রেলস্টেশনে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুজিব জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানাতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ জাদুঘরে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি গ্যালারিতে ডিসপ্লের পাশাপাশি শ্রবণযন্ত্রের মাধ্যমে তৎকালীন প্রেক্ষাপটের ধারা বর্ণনা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিওচিত্রের সঙ্গে ধারা বর্ণনা শুনে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারছে। জাদুঘরে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়ি, সমাধিসৌধ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণ, বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত প্রতীকী চশমা, মুজিবকোট, পাইপ, মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ, জাতীয় শহীদ মিনার, কারাগারের রোজনামচা, বিজয়স্তম্ভ কমলাপুর ও মুজিব শতবর্ষের লোগো প্রদর্শিত হচ্ছে।

যশোর রেলস্টেশন মাস্টার আয়নাল হক বলেন, যশোর রেলস্টেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল জাদুঘরটি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে উপচে পড়া ভিড়। আগামী রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এটি যশোরে প্রদর্শিত হবে। যে কেউ স্টেশনে এসে এ জাদুঘরটি বিনামূল্যে ঘুরে দেখতে পারবে।
রেল জাদুঘর দেখতে আসা ষাটোর্ধ বয়সের বৃদ্ধ আজমল শেখ বলেন, আমরা ছোট থাকতে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তৎকালীন সময়ের অনেক ইতিহাস সম্পর্কে জানি। কিন্তু নতুন প্রজন্ম পূর্বের অনেক ইতিহাস সম্পর্কে জানেনা। তাদের জন্য এ রেল জাদুঘরটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
শহরের রেলগেট এলাকার সালেহা বেগম নামে এক বয়স্ক বৃদ্ধা বলেন, সকালে ছেলে অফিস থেকে ফোন করে বলেছে যে ‘রেল জাদুঘর যশোর স্টেশনে এসেছে, সেখানে বিকালে বাচ্চাদের নিয়ে যান আম্মা।’ তাই বিকালে নাতি-নাতনিদের নিয়ে রেল জাদুঘর দেখাতে আসলাম। এখানে বঙ্গবন্ধুর শৈশবকাল সম্পর্কে বাচ্চারা অনেক ধারনা পেয়েছে। প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।