প্রতিবেদক :
যশোরের চৌগাছা ছারা পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী গোলাম মোস্তফাকে ফের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে ১০টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দ্বিতীয়বার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি। সোমবার বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এসএম সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে আজ মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বহিস্কারের বিষয়টি অবহিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব পালনে প্রধান শিক্ষককে বিরত থাকার আবেদন করা হয়েছে ওই চিঠিতে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এসএম সাইফুর রহমান বলেন, অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক কাজী গোলাম মোস্তফাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ১০ মে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহিদুর রহমান বকুলকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি গত ৫ সেপ্টেম্বর তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করেছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করে কারণ দর্শানো নোটিশ করা হয়েছে। একইসাথে তাকে যেন কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দেয়া না হয়, সে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করানো হয়েছে।
বহিস্কৃত-সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। ম্যানেজিং কমিটি বহিস্কার সংক্রান্ত বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেঅবহিত করলে তিনি অন্য প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তাব করবেন। এরপর শিক্ষাবোর্ড তাকে অনুমোদন দেবে।
– অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, যশোর শিক্ষাবোর্ড
এদিকে, তদন্ত প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাক্তন সভাপতির ২টি ও বর্তমান সভাপতির ৩টি স্বাক্ষর জালিয়াতি, বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন প্রক্রিয়া, জেলা পরিষদের অনুদানের ৩ লাখ টাকা আত্মসাত, টিউশন ফিসের ৯৫ হাজার টাকা তছরুপ, প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটা, স্টিলের বেঞ্চ বিক্রির টাকা এবং অ্যাসাইনমেন্টের খাতা বিক্রির টাকা আত্মসাতসহ ১০টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, আগামী ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। একইসাথে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রভাত কুমার মিশ্রকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কাজী গোলাম মোস্তফার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বের বিষয়টি নিয়মানুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এছাড়াও ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। সে অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, বহিস্কৃত-সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। ম্যানেজিং কমিটি বহিস্কার সংক্রান্ত বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করলে তিনি অন্য প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তাব করবেন। এরপর শিক্ষাবোর্ড তাকে অনুমোদন দেবে।