পাচারের শিকার বৃষ্টিকে নিয়ে স্ট্যাটাস ভাইরাল
দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মায়ের আকুতি
প্রতিবেদক :
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভারতে পাচারের শিকার বৃষ্টি ফকিরকে (১৮) ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন তার মা ওবাইদা বেগম। গত রবিবার (২১ আগস্ট) ‘তপন বিশ্বাস’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভারতের কোলকাতা মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ বৃষ্টির ছবি ও দেশে ফিরিয়ে নেয়ার পোস্ট করা হয়। পোস্টটি ভাইরাল হলে যশোরের অভয়নগরে তার স্বজনরা বৃষ্টিকে শনাক্ত করেন।
বৃষ্টি ফকির (১৮) যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের নাউলী গ্রামের চাঁন মিয়া ফকিরের মেয়ে। আজ সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে বৃষ্টির মা ওবাইদা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে বৃষ্টিকে ফিরিয়ে দিন। এক বছর আগে আমার মেয়েকে প্রতিবেশী রানা মোল্যা ও তার মামাতো ভাই শোয়ায়েব বিশ্বাস ফুসলিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। বৃষ্টির ৩ বছর বয়সী ছেলে আমাদের কাছে রয়েছে। আমার মেয়েকে রানা ও শোয়ায়েব পাচার করে বিক্রি করেছে, ওদের বিচার করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার মেয়েকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে এনে দেন।’
বৃষ্টির পরিবারের দাবি, তার দ্বিতীয় স্বামী রানা মোল্যা ও রানার মামাতো ভাই শোয়ায়েব বিশ্বাস তাকে ভারতে পাচার করে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। রানা মোল্যা উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামের মিজানুর মোল্যার ছেলে এবং শোয়ায়েব বিশ্বাস একই গ্রামের শহিদুল বিশ্বাসের ছেলে।

জানা যায়, গত রবিবার (২১ আগস্ট) ‘তপন বিশ্বাস’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভারতের কোলকাতা মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ বৃষ্টির ছবি ও দেশে ফিরিয়ে নেয়ার পোস্ট করা হয়। ফেসবুকের ওই পোস্টে লেখা রয়েছে : মেয়েটিকে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে মেয়েটি পাচারকারীদের কাছ থেকে পালাতে সক্ষম হয় । গত ১৮ আগস্ট মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর তার জ্ঞান ফেরে। বর্তমানে মেয়েটি মালদা চাইল্ড কেয়ারে রয়েছে।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রানা মোল্যার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এক বছর আগে বৃষ্টি তার আগের ঘরের এক ছেলেকে (তামিম) নিয়ে আমার ও শোয়ায়েবের সঙ্গে ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে বৃষ্টির সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। কিছুদিন সংসার করার পর ছেলে তামিমকে ফেলে রেখে বৃষ্টি হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে খুঁজে না পেয়ে তামিমকে নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি।’ স্ত্রীকে পাচার করার বিষয়ে জানতে চাইলে রানা বলেন, ‘আমি এসব কাজের সঙ্গে জড়িত না। বৃষ্টি নিজেই হারিয়ে গেছে।’
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবশ্যই পাচার হওয়া মেয়েটিকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’