প্রতিবেদক :
যশোরের শার্শা উপজেলার ধলদা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসি জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডে চার প্রবাসীসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার নিহত জামালের পিতা মুছা করিম এই মামলা করেছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরমান হোসেন মামলাটি গ্রহণ করে শার্শা থানায় এই সংক্রান্তে আর কোনো মামলা আছে কিনা তা প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়ার জন্য ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলো, শার্শা উপজেলার ধালদা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে মোখলেছুর রহমান, মৃত খোদা বক্সের ছেলে আব্দুর রহিম, মৃত মহাতাবের ছেলে ইউনুচ আলী, মুনছুর আলীর ছেলে ইমরান হোসেন, আরশাদ ত্রিপুরার দুই ছেলে ভাষান ত্রিপুরা ও আবুল হোসেন, রফিক ত্রিপুরার ছেলে জয়নাল, আবুল খায়েরের ছেলে প্রবাসী রিপন, আব্দুল ওহাবের মেয়ে পারুল খাতুন, জালাল উদ্দিনের ছেলে মিলন হোসেন, ইদ্রিস আলীর স্ত্রী আরজিনা বেগম, আমিনুর রহমানের ছেলে প্রবাসী সোহাগ হোসেন, আব্দুল গণির ছেলে প্রবাসী সাইফুল ইসলাম, মানিক বিশ্বাসের ছেলে প্রবাসী মোখলেছ ও ঝিকরগাছা উপজেলার কুন্দিপুর গ্রামে মতিয়ার রহমানের ছেলে মিন্টু মিয়া।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, জামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় চাকরি করতেন। আসামি সোহাগ, মোখলেছ, সাইফুল ও জালাল মালয়েশিয়ার একই মেসে থাকতো। বিদেশে থাকা অবস্থায় আসামি ইমরামসহ অন্যদের মাধ্যমে জামাল তার বাবা ও মায়ের জন্য নগদ অর্থ, সোনার গহনা ও মূল্যবান জিনিপত্র পাঠাতেন। আসামিরা জামালের পাঠানো টাকা জিনিপত্র তার পিতা ও মাকে না দিয়ে আত্মসাত করতো। জামাল তার পাঠানো টাকা ও জিনিসপত্র আত্মসাতের বিষয়টি জেনে প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি সোহাগ, সাইফুল ও মোখলেছ তাকে মারপিট করেছিল। এরমধ্যে আসামি রিপন সৌদী আরব যাওয়ার কথা বলে মালয়েশিয়া যায় এবং জামালের মেসে ওঠে। একবছর আগে আসামিরা জামাল হোসেনকে হত্যা করে লাশ দেশে পাঠিয়ে দেয়।
লাশের ময়না তদন্ত রিপোর্ট চাইলে আসামিরা নিহত জামালের পিতা মুছা করিমকে বাড়িতে থেকে বের করে দেয়। এরপর তাড়াহুড়া করে আসামিরা লাশের দাফন সম্পন্ন করে। জামালের লাশে সাথে দেয়া ময়নাতদন্ত রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র আসামি রহিম ও ইউসুফ গ্রহণ করে গোপন করে ফেলে।
এ ব্যাপারে গত ১১ আগস্ট শালিসে আয়োজন করলে আসামিরা বাড়িতে হামলা করে মারপিট ও ঘরবাড়ি ঘর ভাংচুর করে মুছা করিমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আসামিরা বিভিন্ন সময় জামালের উপার্জিত ৮-১০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছে বলে স্বীকার করেছে। ওই অর্থ ফেরত দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এই হত্যা মামলা করেছেন।